পূর্বতন সিলেট বা শ্রীহট্ট জেলায় অতিবাহিত হয়েছে লেখকের প্রথম জীবন। এই সেই শ্রীহট্ট যা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আশীর্বাদধন্য। ১৯১৯-এর ৫ নভেম্বর তাঁর সিলেট আগমন, ৮ নভেম্বর চলে যাওয়া। শিরোনামহীন এক কবিতায় কবি এই জেলাকে অভিহিত করেছেন ‘সুন্দরী শ্রীভূমি’ বলে। এই সিলেটেই কেটেছে লেখকের ছোটোবেলা, কৈশোর, তাঁর প্রাকযৌবন। ফেলে আসা সেইসব দিনের স্মৃতিকথাই এই বইয়ের সম্বল। লেখকের ছোটোবেলা কেটেছিল রাজারগাঁও গ্রামে। সুরমা নদীর থেকে মাত্র পাঁচশো মিটার দূরে ছিল তাঁর বাড়ি। পোস্টঅফিস ছিল দোয়ারাবাজার, থানা ছাতক, মহকুমা সুনামগঞ্জ ও জেলা শ্রীহট্ট। একদিকে যেমন এই স্মৃতিচারণ আমাদের স্মৃতিমেদুর করে তোলে, অন্যদিকে তা এক অনতি-অতীতের বিশ্বস্ত ডকুমেন্টেশনও বটে। স্বাধীনতা-উত্তরকালে পূর্ব পাকিস্তানের শ্রীহট্টে এক সংখ্যালঘু পরিবারে বড়ো হতে থাকা বালক কীভাবে তার মায়াবী পারিপার্শ্বিককে, সুরমা নদীকে, বিদ্যালয়কে এবং সর্বোপরি পরিবর্তনশীল সময়কে আত্মস্থ করে নিচ্ছে, ‘আমার কাল আমার ভুবন’ তার নিবিড় ধারাভাষ্য।
বিশিষ্ট অধ্যাপক পূর্ণেন্দুকান্তি দাশ সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মুরারিচাঁদ কলেজ থেকে রসায়নে অনার্স নিয়ে বি এসসি এবং একই বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম এসসি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭০-এর ১৪ সেপ্টেম্বর আগরতলার মহারাজা বীরবিক্রম মহাবিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগে যোগদান। তেত্রিশ বছর অধ্যাপনার পর ২০০৩-এর ৩১ জানুয়ারি অবসরগ্রহণ। অতিথি অধ্যাপক হিসেবে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যায়েও পড়িয়েছেন কিছুকাল। শিক্ষক হিসেবে তাঁর ব্যতিক্রমী অবদানের জন্য ত্রিপুরা সরকার ২০০৩ সালে ‘আদর্শ শিক্ষক’ অভিধায় সম্মানিত করেছেন তাঁকে। শিক্ষকজীবনের শুরু থেকেই শ্রীদাশ বিজ্ঞান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। ত্রিপুরা কেমিক্যাল সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নির্বাহ করেছেন দীর্ঘকাল। বিজ্ঞানের বিবিধ বিষয়ের ওপর বক্তব্য রেখেছেন প্রায় অর্ধশত সেমিনারে। তাঁর ‘যুগে যুগে আর্সেনিকের বিষক্রিয়া’ প্রবন্ধটি ২০০৯-এ বিহার রাজ্যের শিক্ষা বোর্ডের নবম শ্রেণির পাঠ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। শ্রীদাশের পৃষ্ঠপোষকতায় ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ তাঁর প্রয়াত পিতা-মাতার নামে ‘প্যারীমোহন-লাবণ্যপ্রভা মেমোরিয়াল ফেলোশিপ’ প্রবর্তন করেছেন। এই লেখকের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ ‘প্লুটো আর গ্রহ নয়_বামনগ্রহ মাত্র’, ‘পৃথিবীর আকাশে ধূমকেতু’, ‘জগদীশচন্দ্র_ফিরে দেখা’।
Reviews
There are no reviews yet.